অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : রাজশাহীতে একই ছাদের নিচে চার স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করছেন পবা উপজেলার বড়গাছি ইউনিয়নের এএসএম জুবায়ের হোসেন মণ্ডল জুয়েল (২৮)। তিনি পেশায় পানচাষী। এ ছাড়া তিনি বিভিন্ন ফসল স্টকের ব্যবসা করেন।
জানা যায়, এ পর্যন্ত জুয়েল মণ্ডল ছয়টি বিয়ে করেছেন। বর্তমানে চার স্ত্রীকে নিয়ে সুখে-শান্তিতে সংসার করছেন। জুয়েলের বাবা ও মাসহ চার স্ত্রী মিলেমিশে একই বাড়িতে থাকছেন। তিনি বাবা মার একমাত্র সন্তান।
এ বিষয়ে পবা উপজেলার বড়গাছী ইউপি চেয়ারম্যান শাহাদাত হুসাইন জানান, দুই বছর হলো তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি কখনো জুয়েল মণ্ডলের স্ত্রীদের কোনো অভিযোগ শোনেননি। কেউ কখনো অভিযোগও করেননি। জুয়েলকে তিনি আগে থেকেই চেনেন। তারা ভালোই আছেন।
এ বিষয়ে জুয়েল জানান, তার স্ত্রীদের মধ্যে কোনো ঝগড়া-বিবাদ নেই। বাবা-মাসহ চার স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে সুখের সংসার তার। চার স্ত্রীই তার যত্ন নেন এবং তাকে খুব ভালোবাসেন। তার স্ত্রীরা হলেন রিমা, রোপা, ময়না ও হাসি।
স্থানীয়রা জানান, ২০১২ সালে জুয়েল পারিবারিকভাবে প্রথম বিয়ের করেন। কিন্তু বনিবনা না হওয়ায় ৩৬ দিনের সন্তান রেখে তাদের ডিভোর্স হয়। কিছু দিন পর বিয়ে করেন রিমাকে। তারপর বিয়ে করেন রোপাকে। তবে জুয়েলের চতুর্থ স্ত্রী বেশি দিন সংসার করেনি। এরপর বিয়ে করে ময়নাকে। সর্বশেষ বিয়ে করেন হাসিকে। বর্তমান স্ত্রীদের সঙ্গে জুয়েলের প্রথম আলাপ ফেসবুকে বা কর্মক্ষেত্রে।
জুয়েল জানান, ‘মুসলিম নাগরিক হিসেবে কোরআনের আইন অনুযায়ী চারটা স্ত্রী সবসময় রাখতে পারবো। বাংলাদেশের বিবাহ আইন অনুযায়ীও আমি চারটা স্ত্রী রাখতে পারবো। আমি এই আইনের সুযোগ নিয়েছি। আমি এটা বলব না, সুন্নাত পালনের জন্য অথবা আমি তার (আগের স্ত্রী) মধ্যে কোনো খুঁত (অস্বাভাবিক আচরণ) পেয়েছি তাই বিয়ে করেছি। আমি তাকে (আগের স্ত্রী) জানাই আমার একাধিক বিয়ে করা প্রয়োজন।’
জুয়েল মণ্ডল বলেন, ‘এখানকার সমাজে অনেকেই আছেন, বাড়িতে বউ আছে। কিন্তু তারা বাইরে খারাপ সম্পর্কে লিপ্ত হন। এই চিন্তাটা আমার নেই। আমি বৈধভাবে চারটা মেয়ের দায়িত্ব নিয়েছি। যাকে যখন বিয়ে করেছি, তাকে বলেছি, যে আমার ঘরে আরও একাধিক স্ত্রী আছে। তারা সেটা মেনেই বিয়ে করেছে। তিন স্ত্রীকে নিয়ে কোনো সমস্যা হয়নি। তবে চতুর্থ স্ত্রীর বয়স কম ছিল। তারও সংসার করার ইচ্ছা ছিল, চেষ্টাও করেছে। কিন্তু ঘরে একাধিক সতীন থাকায় নিয়মকানুনের মধ্যে জীবনযাপন করতে হয়। যেটা সে পারেনি। তাই স্বেচ্ছায় চলে গেছে।’
জুয়েল বলেন, ‘প্রথম এক থেকে চতুর্থ স্ত্রী সবাই কুমারী। তাদের প্রথম স্বামী তিনি। সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সমাজের চোখে যারা অবহেলিত তাদের যদি দায়িত্ব নেওয়া যায়। এরপর ২০২১ সালে একটা বিধবা মেয়েকে বিয়ে করেছি। সর্বশেষ ২০২৩ সালের জুন মাসে ষষ্ঠ বিয়ে করেছি।’
স্ত্রীরা জানান, ‘তারা পরস্পর বোনের মতো বসবাস করেন, একসঙ্গে থাকেন। কেউ কাউকে হিংসা করেন না। কেউ কম কাজ করল বা বেশি কাজ করল, তাতে কিছু যায় আসে না। তারা জেনে শুনে জুয়েলকে বিয়ে করেছেন। তাই তাদের মন খারাপ হয় না। তাদের স্বামী এমন কিছু করেন না, যে তাদের মন খারাপ হবে।’
Leave a Reply